ইউ এফ ও ( Unidentified Flying Object )
যখন থেকে বিজ্ঞান উন্নত হতে শুরু করে তখন থেকে বিজ্ঞানীদের মনে প্রথম এই ধারণা আকার নিতে আরম্ভ করে যে দূর কোনো গ্রহে হয়তো প্রাণের অস্তিত্ব থাকলেও থাকতে পারে। নেহাতই সাধারণ একটা ধারণা হিসাবে যারা সূত্রপাত , তা ক্রমে ক্রমে পরিণত হয় বিশ্বাসে। বিজ্ঞানীরা তাঁদের নিজস্ব অভিমত নানা পত্রপত্রিকা এবং সায়েন্স জার্নালে পেশ করেন। বেশ কয়েক বছর আগে মার্স গ্রহের মাটিতে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান এই ধারণাকে আরো উস্কে দিয়েছে। কিন্তু এ তো গেল বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীদের কথা। সাধারণ মানুষের মনে যেখানে অতশত যুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক নিয়ম কানুন কাজ করে না , তাদের কাছে এই সদ্য আবিষ্কৃত তথ্যটি এক রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। এবং ঠিক তখন থেকেই কল্পনা এবং বাস্তব মিলিয়ে অদ্ভুত সমস্ত ঘটনার সূত্রপাত ঘটল যার থেকে জন্ম নিল ফ্লাইং সসার নামের বস্তুটি। পৃথিবীর প্রায় অনেকমানুষই দাবি করেন যে মাঝে মধ্যেই তাঁরা আকাশে উড়ন্ত কিছু লক্ষ করেছেন যার আকার এক গোলাকার চাকতির মতো। চলতি ভাষায় এই থেকেই এর নাম হয়ে গেল ফ্লাইং সসার। তবে বিজ্ঞানীদের যুক্তি ও হিসেবি মন এই প্রায় কল্পিত বস্তুটিকে নাম দিলেন আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট অথবা ইউ এফ ও বলে।
১৯৭৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় মেলবোর্ন শহরে আকাশে প্লেন চালাচ্ছিল পাইলট ফ্রেডরিখ ভ্যালেনটিচ। তিনি রেডিওর মাধ্যমে গ্রাউন্ড কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। হঠাৎই কন্ট্রোল রুমের ব্যক্তিরা শুনলেন যে পাইলট আতঙ্কগ্রস্ত গলায় বলছেন যে আকাশে পূর্ব দিক থেকে একটা লম্বা আকৃতির অচেনা বস্তু এগিয়ে আসছে তাঁর প্লেনের দিকে। যার থেকে আবার সবুজ রঙের আভা বেরচ্ছে। তিনি এই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন যে ওটা কোনও এয়ারক্র্যাফট নয়। ব্যাস ,সেই শেষ। কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হল এবং ভ্যালেনটিচ প্লেন সমেত সম্পুন্যভাবে হারিয়ে গেলেন। এই ঘটনার ঠিক পরে পরেই অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের আকাশে আলোয় মোড়া রহস্যময় সব বস্তু দেখা যেতে লাগল। রেডারে অজানা কিছুর উপস্থিতিও ধরা পড়ল। হুবহু একই অভিঞ্জতা ওয়াসিংটনের আকাশে ওড়ার সময় কেনেথ আর্নল্ডের হয়েছিল। তিনি দেখেছিলেন প্রচন্ড গতিবেগে আকাশে উড়ে যাওয়া রুপোলি রঙের নটী ডিস্ক।
কাগজে কাগজে এই ধরনের সব ঘটনা ফলাও করে বেরতেই আরও বেশি করে যেন বিজ্ঞানীদের কাছে ফোন আসতে লাগল যে তাঁরাও ফ্লাইং সসার দেখেছেন। এমনও অনেক ফোন আসলো যার বক্তব্য হল যে তাঁরা সেই সসারের প্রাণীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁদের সঙ্গে ঘুরেছেনও। ঘটনাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যাতা খতিয়ে দেখার জন্য ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির আলভিন এইচ লসন এইসব প্রত্যক্ষদশ্রীদের হিপনোটাইজ করে দেখলেন যে তাঁরা হিপনোটিক স্টেজেও একই কথা বলছেন।
ইউ এফ ও'র অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে যদি না কোন ভালো প্রমান পোয়া যায়। " চ্যারিয়টস অফ গড " বইতে এরিক ফন ড্যানিকেন তো লিখেইছেন যে আমাদের এই পৃথিবীর মানুষেরা তো বহির্জগতের এলিয়েনদের হাতেই সৃষ্টি ও তাদের দ্বারাই সমৃদ্ধ।
বর্তমান*১১জুলাই*২০০৪
গোধূলি গোস্বামী
মন্তব্যসমূহ