সগোত্র বিবাহের সম্ভাব্য বিপদ

                  



সগোত্র বিবাহ শাস্ত্রে নিষিদ্ধ। কিন্তু আজকাল অনেকে প্রেমে পড়ে সগোত্র বিবাহে আবদ্ধ হচ্ছেন। তাদের সন্তান-সন্ততির মধ্যে তেমন কোন দোষ দেখা যাচ্ছে না।  অনেক ক্ষেত্রে বরং ভাল ফল দেখা যাচ্ছে।  সগোত্র বিবাহ ছাড়া যে-সকল নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহ শাস্ত্রসম্মত নয় , সে সকল ক্ষেত্রেও সম্পন্ন বিবাহের ফল খারাপ হচ্ছে না।  ইহাতে অনেকের মন থেকে নিকটস্থিত রক্তের ভয় কমে যাচ্ছে ! সগোত্র বিবাহের প্রতি বিরূপ মনোভাবকে অনেকে কুসংস্কার বলে মনে করছেন।
                  কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মুখে যে সকল কথা মাঝে মাঝে শোনা যায় তাতে সত্য সত্যই ঋষিবাক্যের কথা স্মরণ করতে হয়। সম্প্রতি একটি দম্পতির কথা জানা গেল যাদের তিনটি সন্তান জন্মের কয়েক বছরের মধ্যে মারা গিয়েছে থেলাসেমিয়া রোগে ।  অথচ ওদের বিবাহ সগোত্র বিবাহ  নয় ,শাস্ত্র নিষিদ্ধ নিকট আত্মীয়ের মধ্যেও নয়।  - যদিও স্ত্রী স্বামীর মায়ের দিকের দূর সম্পর্কীয়। এই দূর সম্পর্ক টুকুই এহ্মেত্রে বিপদের কারণ হয়েছে। পৃথিবীর অনেক প্রখ্যাত চিকিৎসকদের  কাছে কলকাতা ট্রপিক্যালের ড: যে.বি.চট্টোপাধ্যায় এর চেষ্টায় কেসটি উপস্থাপিত হয়েছিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচ.লেহম্যান উটা, উনিভার্সিটির ডঃ ম্যাক্সওয়েল , এম উল্টরোব,  নিউইয়র্কের  গেসিয়েভা , লন্ডনের ডঃ সি.জ। মি.ব্রিটেন, ভেলোরের ডঃ ডব্লিও আর সেন্টার ওয়াল  সকলেই নিকট ও প্রায় নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহের বিপদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বিপদটা কি করে আসে তা বোঝাতে গিয়ে ডঃ  এম এম উইল্টরোব লিখেছেন - বর্তমানক্ষেত্রে যেখানে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে থেলাসেমিয়া মাইনরের বীজ মাত্র রয়েছে সেখানে স্বামী ও স্ত্রী   কারোরই কোন বিপদের সম্ভবনা নেই।  কিন্তু তাঁদের সন্তান যখন জন্মাবে তখন সে সন্তানের থেলাসেমিয়া মেজর রোগ হবার খুবই সম্ভাবনা - আর সে রোগ হবে গুরুতর।
                 ডঃ সেন্টারওয়ালের মতে এক্ষেত্রে শতকরা ৭৫ ভাগ সম্ভাবনা রয়েছে সুস্থ শিশু জন্মাবার , আর ২৫% সম্ভাবনা রয়েছে রোগগ্রস্ত সন্তান জন্মের।  যদি প্রত্যেক দম্পত্তিরই সম্ভাবনা রয়েছে সম সংখ্যক পুত্র কন্যা লাভের তথাপি কারো কেবল পুত্র জন্মে, কারো কেবল কন্য।এক্ষেত্রে শতকরা ৭৫ ভাগ সুসন্তানের সম্ভবনা সত্ত্বেও পরপর
তিনটি রোগগ্রস্ত শিশুর জন্ম হয়েছে দুৰ্ভাগ্য বশতঃ।  ডঃ সেন্টারওয়াল  সবধন করে দিয়ে বলেছেন  আলোচ্য দম্পতির স্বামীর বংশের মধ্যে বিবাহ হলে বিপদের সম্ভাবনা খুবই বেশী। যদি বিবাহ দিতে হয় তবে পাত্র ও পাত্রী উভয়ের রক্ত পরীক্ষা করে তবে বিবাহ অনুষ্ঠিত করা উচিত।  ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে সগোত্র বা নিষিদ্ধ সম্পৰ্কিটের বিবাহে কুফল হয়নি বলে শাস্ত্রীয় বিধান লঙ্ঘনের অপচেষ্টা নিরাপদ নয়।  *সংগ্রহীত (ভারতবর্ষ *আষাঢ় *১৩৭৫)
                                                                                                               *ললিতমোহন রায়

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আলকুশী চমকে দেওয়ার মতন একটি গাছ

10 টি বিখ্যাত লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি আর্টওয়ার্কস

নাগাল্যান্ডে কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ !